সিলেট সিটিতে হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো নিয়ে এলাহি কা ণ্ড! ক্ষুব্ধ নগরবাসী

সিলেট সিটিতে হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো নিয়ে এলাহি কা ণ্ড! ক্ষুব্ধ নগরবাসী

জুমাস ডেস্ক: সিলেট মহানগরে হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো নিয়ে রীতিমতো এলাহি কাণ্ড ঘটছে। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সম্প্রতি আরোপ করা হোল্ডিং ট্যাক্সের তথ্য নগরভবনের সামনে ক্যাম্প করে মহানগরের পুরাতন ২৭টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জানিয়ে দিচ্ছে এবং ট্যাক্স আদায় করছে। আর এ তথ্য জানতে বা ট্যাক্স দিতে গিয়ে সবাই অবাক হচ্ছেন, হচ্ছেন ক্ষুব্ধ।

(সিসিকের সম্প্রতি আরোপিত হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের পদ্ধতি ইমারত ও জমির উপর কর ৭%, ময়লা নিষ্কাশন রেইট ৭%, সড়কবাতি রেইট ৭% ও পানি ৩%- এই মো ২০%। অন্যদিকে, স্থাপনা পাকা হলে প্রতি বর্গফুট ৫, আধা-পাকা ৩, কলোনি ৫ ও বাণিজ্যিক ৭ টাকা।)

নাগরিক সুবিধার দিকে নজর না দিয়ে, কোন গণ শুনানী না করেই আগের চেয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে ৫০০ গুন ট্যাক্স বৃদ্ধিকে তুঘলকি সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন সিলেট নগরের নাগরিকরা। সিটি করর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ পঞ্চবার্ষিক পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন গৃহকর নির্ধারণ করেছে। ভবন মালিকরা নতুন নির্ধারিত গৃহকরের নোটিস পেয়েই ক্ষোভে ফুঁসছেন। তারা বলছেন, সিটি করর্পোরেশন অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিকহারে কর বৃদ্ধি করেছে।
ক্ষুব্ধ সিলেট নগরবাসী এরমধ্যেই তাদের আপত্তি সিটি করর্পোরেশনকে জানিয়েছেন। নাগরিকরা রাস্তায় নেমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য মেয়রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সিলেট নগরের অধিকাংশ বাড়ি ঘরের সাথে প্রবাসীরা জড়িত। নাগরিকদের এমন প্রতিবাদী অবস্থায় প্রবাসী সিলেট নগরবাসী বসে থাকতে পারে না। আমরা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে চাই। প্রবাসীরা কষ্ঠার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে সিলেট নগরে বাসা বাড়ি নির্মান করেছেন। প্রবাসীদের এমন বহু ঘরবাড়িতে অনেকেই নিয়মিত থাকেন না। বছরে একবার হয়তো দেশে গিয়ে থাকেন অথবা আত্মীয় স্বজন থাকেন। এছাড়া সিলেটে জমির মূল্য ও বাড়ি নির্মাণ ব্যয়ের তুলনায় বাড়ি ভাড়া খুবই নগণ্য। যেসব প্রবাসী বাড়ি ভারা দিয়ে থাকেন, তাদের অবস্থা খুবই করুন। দেশের বাইরে করায় গণ্ডায় ট্যাক্স পরিশোধ করে দেশে নেয়া অর্থের আবাসন বিনিয়োগে এখন তাদের উপর নতুন করে খড়গ নামছে। সিলেট নগরের অধিকাংশ বাসা বাড়িতেই এমন প্রবাসী সংযোগ রয়েছে এবং প্রবাসীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
এখন কয়েক শত গুন হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির চাপ প্রবাসীদের উপর পড়বে। এমন তুঘলকি সিদ্ধান্তের কারণে প্রবাসীরা সিলেট শহরে নতুন করে বাড়ি নির্মাণে উৎসাহ হারাবেন। দেশের সাথে তাদের সংযোগ বিনষ্ট হবে। দেশ প্রবাসীদের অর্থ প্রবাহ থেকে বঞ্চিত হবেন। ‘
সিলেট নগর নাগরিক সেবার দিক থেকে অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থা, হাঁটা চলার ফুটপাথ, পরিবেশ বান্ধব নগর পরিকল্পনার অভাব, খাল ভরাট হওয়ার ফলে জলাবদ্ধতা চরমে। এমন অবস্থায় হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর আগে অবশ্যই নাগরিক সুবধা বৃদ্ধি করে সন্তোষজনক পর্যায়ে নিতে হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর আগে অবশ্যই অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা করতে হবে। রাজার ইচ্ছায় রাজ্য চলতে পারে না। নাগরিকরা ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেন, জনগণের মতামত নিয়ে তাদের উপর করের বোঝা চাপাতে হবে।
হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ফুঁসে উঠা সিলেট নগরবাসীর সাথে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি। এমন সংহতি ও সমর্থন জানিয়ে আমরাও নিজেদের স্বার্থে সাড়া দেয়ার তাগিদ অনুধাবন করছি। আসুন এ নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নগর কতৃপক্ষ বরাবরে হোল্ডিং ট্যাক্স স্থগিত রাখার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি সিলেটের আন্দোলনরত নাগরিক সমাজের সাথে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করি।
এ ক্ষোভ কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের নয়। সিলেট নগরবাসীর। আসুন আমরা দ্রুত এ নিয়ে আমাদের অবস্থানের কথা জানান দেই। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিউইয়র্ক থেকে আমরা আওয়াজ উঠাই। দেশের বাইরে ছড়িয়ে থাকা সিলেট নগরের প্রবাসীদের পক্ষ থেকে আমরা আমরা প্রথম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আহ্বান জানাতে পারি। কাজ না হলে, হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে আমরা আরও বর পরিসরে আন্দোলন করার সুযোগ রয়েছে। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের এ নিয়ে বিলম্বের কোন অবকাশ নেই।

(জাগ্রত প্রবাসী সিলেট নগরবাসী)

Loading