জুমাস ডেস্ক: চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। আরও ৩ দল সেই পর্বে সুযোগ করে নেবে। সেই লড়াইয়ে আছে ৫টি দল। তবে সবার চেয়ে কম ম্যাচ খেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আছে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে। ক্যারিবিয়ান কাইল মেয়ার্সের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ১৮ রানে হারিয়ে ফরচুন বরিশালও কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে।
ফরচুন বরিশাল ১০ ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে দারুণ নেট রানরেটসহ ১২ পয়েন্ট নিয়ে এখন তৃতীয় স্থানে। এই পরাজয়ে সিলেটের প্লে-অফ খেলার রাস্তা কঠিন হয়ে গেছে। ১০ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট তাদের।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফরচুন বরিশাল টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৮৩ রান করে।
সিলেট স্ট্রাইকার্স জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করতে সক্ষম হয় মূলত সপ্তম উইকেটে বেনি হাওয়েল ও আরিফুল হকের ১০৮ রানের বিশ্ব রেকর্ড গড়া জুটিতে।
তবে তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবের জোড়া আঘাতে ৬৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল। আহমেদ শেহজাদ ১১ বলে ৩ চারে ১৭, তামিম ইকবাল ১৮ বলে ৩ চারে ১৯ ও সৌম্য সরকার ৮ বলে ৮ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মেয়ার্স ও মুশফিকুর রহিম চতুর্থ উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৪৮ বল থেকে। এতেই বড় স্কোরের ভিত পায় ফরচুন বরিশাল।
কাইল মেয়ার্স ৩১ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৪৮ রানে শফিকুল ইসলামের পেসে সাজঘরে ফেরেন। তবে মুশফিক ৩০ বলে ৫২ করে অবশ্য বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ৩২ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৫২ রানে সাজঘরে ফিরেছেন। তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিপিএলে ১০০ ছক্কা হাঁকানোর মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। আগের ম্যাচে তামিম বিপিএলে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ছক্কার শতক হাঁকান।
ক্রিস গেইল ৫২ ইনিংসে ১৪৩ ছক্কা হাঁকিয়ে সবার ওপরে। দ্বিতীয় তামিম ৯৮ ইনিংসে ১০৩ ও তৃতীয় মুশফিক ১১৫ ইনিংসে ১০০ ছক্কা নিয়ে।
মেহেদি হাসান মিরাজ শেষদিকে ৭ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৫ রান করেন। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় ফরচুন বরিশাল। তানজিম ৪ ওভারে ৪৮ রানে নেন ৩ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই মেয়ার্সের জোড়া আঘাত ও স্লিপে সৌম্যর দুর্দান্ত একটি ক্যাচে ০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় সিলেট। জাকির হাসান (৫) রান আউট, মোহাম্মদ মিঠুন (৬ বলে ১০), অ্যাঞ্জেলো পেরেরা ১৯ বলে ২ চারে ১৭ রানে ও রায়ান বার্ল (১০ বলে ৩) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। ফলে ৪০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট। সেখান থেকে জুটির বিশ রেকর্ড গড়েন হাওয়েল ও আরিফুল। দুজনই অর্ধশতক হাঁকান।
সিলেট স্ট্রাইকার্স বিশাল হারের মুখে থাকা শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৮ রানে হারে। সপ্তম উইকেটে ১০৮ রানের জুটি গড়েন হাওয়েল ও আরিফুল।
২০১৬ সালে কলম্বোর কোল্টস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ টি২০ আসরে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাবের লাসিথ আবেরতে ও রোশান অনুরুদ্ধ সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১০৭ রানের জুটির বিশরেকর্ড গড়েন চিলো মারিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন হাওয়েল-আরিফুল। হাওয়েল ৩২ বলে ৫ চার, ২ ছয়ে ৫৩ ও আটে নামা আরিফুল ৩১ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৫৭ রান করেন। ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করতে সক্ষম হয় সিলেট। মেয়ার্স ৪ ওভারে ১ মেডেনে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল ইনিংস – ১৮৩/৬; ২০ ওভার (মুশফিক ৫২, মেয়ার্স ৪৮, তামিম ১৯; তানজিম ৩/৪৮)।
সিলেট স্ট্রাইকার্স ইনিংস- ১৬৫/৮; ২০ ওভার (আরিফুল ৫৭, হাওয়েল ৫৩; মেয়ার্স ৩/১২)।
ফলাফল: ফরচুন বরিশাল ১৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ: কাইল মেয়ার্স (ফরচুন বরিশাল)।