জুমাস ডেস্ক: চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপের আজ শনিবার ভোরের ম্যাচে ইতিহাসের সাক্ষী হতে হতে শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। আরেকটু হলেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে রীতিমতো ভূমিকম্প তুলে দিচ্ছিল নেপাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হারতে হলো মাত্র ১ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাক্রমশালী দলকে চোখ রাঙানি দিয়ে শেষ পর্যন্ত নেপালিজদেরই হৃদয় ভেঙেছে।
শনিবার (১৫ জুন) আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১১৫ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাড়া করতে নেমে নেপালের শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। তখনই ম্যাচে ভর করে নাটকীয়তা। ১৯তম ওভারে কুশল মাল্লাকে হারিয়ে ৮ রান তুলতে পেরেছে নেপাল। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। ওটনিল বার্টমানের করা শেষ ওভারের প্রথম ৫ বল থেকে একটি চারসহ ৬ রান নেন গুলশান ঝা। জয়ের জন্য শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। দুর্ভাগ্য, ঝা শেষ বলটি ব্যাটেই লাগাতে পারেননি। দৌড়ে রান নিয়ে ম্যাচটি টাই করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নন স্ট্রাইকে অল্প দূরত্বের জন্য রান আউট হয়ে যান ঝা। মাত্র ১ রানের জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের শরীর থেকে যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে।
শেষ বলে বাউন্সার মেরেছিলেন বার্টমান। ঝা ব্যাটে লাগাতে না পারলেও অন্য প্রান্ত থেকে সোমপাল দৌড় দেন। ঝা-ও দৌড়ে নন স্ট্রাইক প্রান্তে গিয়ে ১ রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই প্রোটিয়া উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কক বলটা বোলারের প্রান্তে থ্রো করেন। দৌড়াতে থাকা ঝা-র গায়ে লেগে বল চলে যায় ক্রিজের পাশে থাকা হাইনরিখ ক্লাসেনের হাতে। যিনি বল ধরে কাছ থেকে স্টাম্প ভেঙে দিলে হৃদয় ভাঙে নেপালের। ৭ উইকেটে ১১৪ রানে থামে নেপালের ইনিংস।
তাড়া করতে নামা নেপালের ইনিংসেও চল্লিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস একটি। ৪৯ বলে ৪২ রানে আউট হন উইকেটকিপার আসিফ শেখ। ১৮তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১০০ রানে আউট হন তিনি। তার আগে আসিফের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটিতে রান তাড়ায় নেপালকে সঠিক পথেই রেখেছিলেন অনিল শাহ। ২৪ বলে ২৭ রানে আউট হন অনিল। জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল নেপালের। অর্থাৎ ওভারপ্রতি গড়ে ৬ রান করে দরকার ছিল।
৩ ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পেয়ে ‘ডি’ গ্রুপে চতুর্থ নেপাল এই হারে টুর্নামেন্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়ল। নিজেদের শেষ ম্যাচটা তারা খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ম্যাচের সবগুলো জিতে মোট ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়। নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা জিতলেই সুপার এইটে উঠবে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় নেদারল্যান্ডস। আগেই বাদ পড়া শ্রীলঙ্কা ৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১১৫/৭ (হেনড্রিকস ৪৩, স্টাবস ২৭*, মার্করাম ১৫, ডি কক ১০, মিলার ৭; কুশল ৪/১৯, দীপেন্দ্র ২১/৩, লামিচাঁনে ১৮/০, অবিনাশ ০/১৯)
নেপাল: ২০ ওভারে ১১৪/৭ (আসিফ ৪২, অনিল ২৭, কুশল ১৩, দীপেন্দ্র ৬, ঝা ৬, মাল্লা ১, রোহিত ০; শামসি ৪/১৯, নর্কিয়া ১/২৭, মার্করাম ১/৮)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: তাব্রেইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)