জুমাস ডেস্ক: গত রাতে সিলেট নগরবাসীর আরেকটি নির্ঘুম রাত কেটেছে ।
রোববার (২ মে) রাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরের শতাধিক এলাকা।
সোমবার (৩ মে) ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকা এ বৃষ্টির নগরের শতাধিক এলাকার বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।
এবং এদিকে পানি ঢুকে পড়েছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। ডুবে গেছে কয়েকটি প্রধান সড়ক। ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিতে দেখা যায় নগরবাসী।
এসব এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও খাবারের সংকট তৈরি হয়েছে।
ফলে, নতুন করে ৬ হাজার পরিবার ভোগান্তিতে পড়েছে। পূর্বে এ সংখ্যাটি ছিল ৪ হাজার। সবমিলিয়ে এখন ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগে থেকে নগরের ৯টি ওয়ার্ডের কিছু এলাকা প্লাবিত ছিল। রোববার রাতের বৃষ্টিতে নগরের প্রায় সবগুলো ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।।
আরও জানা যায়, রোববার রাত ও সোমবার সকালে ২৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে নগরের উপশহর, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, তেরোরতন, সাদারপাড়, সোবহানীঘাট, যতরপুর, কুশিঘাট, তালতলা, জামতলা, মণিপুরি রাজবাড়ি, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, পায়রা, দরগামহল্লা, মুন্সীপাড়া, হাওয়াপাড়া, নাইওরপুল, সোনারপাড়া, বালুচর, মীরের ময়দান, কাষ্টঘর, পুলিশ লাইনস, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপার, খাসদবির, কলাপাড়া, মজুমদারপাড়া, লালদিঘিরপার ও মেজরটিলা এলাকা মধ্যরাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, আগে থেকেই বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নগরীর মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সোমবার বেলা ১২টার তথ্যমতে, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে ১২টায় বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
এদিকে, সিলেট নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা আমির আলী জানান, তারা বাসার নিচের হাঁটু পর্যন্ত পানি। কোনো ঘরের মধ্যে বিদ্যুত নেই, গ্যাস নেই, খাবার নেই। কেউ সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসছে না।’
আরেকজন বাসিন্দা জানান, রাত থেকে বাসায় পানি ঢুকা শুরু হয়। রাতে ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে চৌকির উপরে ছিলাম। গত কয়েকদিন ধরেই উপশহরের সড়কগুলোতে পানি রয়েছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকে। বৃষ্টি হলেই যেন দুর্ভোগ নেমে আসছে।
উপশহরে একজন বাসিন্দা বলেন, বন্যার পরবর্তী সময় মানুষের যে দুর্ভোগ নিরসনের জনপ্রতিনিধি ও সমাজের বিত্তশালীদেরকে এগিয়ে আসা উচিত। উপশহরের সবচেয়ে বড় সংকট এখন খাবার পানির। দোকানপাট বন্ধথাকায় বাজার করতে অসুবিধা হচ্ছে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ শাখা জানায়, নতুন করে আরও ৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলররা খাবার পানি, স্যালাইন বিতরণ করছেন।