রাতারগুল

রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র ফ্রেসওয়াটার সোয়াম্প ফরেস্ট। একসময় বিশাল এলাকা জুড়ে এই বনের অস্তিত্ব থাকলে ও এখন দুই বর্গকিমি এর মতো জায়গাজুড়ে টিকে আছে। এটি মুলতঃ হিজল ও কড়চ জাতিয় গাছের ঘনবন। বিভিন্ন প্রজাতির পাখী, বানর, সাপ ও অন্যান্য সরীসৃপের অভয়ারন্য।

রাতারগুল মুলতঃ তিনটি নদীর কাছাকাছি। দক্ষিন দিক থেকে চ্যাঙ্গের খাল এসেছে, পূর্বদিক থেকে কাফনা। চ্যাঙ্গের খাল ও কাফনা মিলে গোয়াইন নাম ধরে চলে গেছে উত্তরে গোয়াইনঘাটের দিকে। একটা সময় এই তিন নদীর পাড় ধরেই ছিলো রাতারগুলের অস্তিত্ব। বর্ষাকালে এই নদীগুলোর পানি ঢুকে যায় বনের ভেতরে এবং ১৫-২০ ফুট পর্যন্ত পানিবন্দী হয়ে পড়ে পুরো বন। তখন গাছগুলোর অর্ধক পানির উপর, অর্ধেক পানির নীচে, পানিতে ঘন জঙ্গলের ছায়া সবমিলিয়ে এক অভূতপুর্ব দৃশ্যের অবতারনা হয়।

রাতারগুল যদিও গোয়াইনঘাট উপজেলায় কিন্তু এটি সিলেট শহরের বেশ কাছাকাছি। এয়ারপোর্ট রোড ধরে এগিয়ে সিলেট- কোম্পানীগঞ্জ সড়কের ধুপাগুল পয়েন্ট থেকে ধুপাগুল- হরিপুর সড়ক ধরে একটু গেলেই মোটরঘাট। মোটরঘাট থেকে ছোট নৌকা নিয়ে বনের ভেতর ঢুকা যায়। এ ছাড়া মোটরঘাটের বদলে আরেকটু সামনে এসে রামনগর বাজার থেকে হাতের ডান দিকে চলে যাওয়া যায় রাতারগুল গ্রামে। গ্রামের ভেতর থেকে ও নৌকা নিয়ে গ্রামে ঢুকা যায়। এই গ্রামের মানুষেরা বেশ অতিথিপরায়ন। ফেরার সময় ধুপাগুলের দিকে না গিয়ে বিপরীতে হরিপুর চলে গেলে সিলেট-জাফলং মহাসড়ক।

জলমগ্ন অবস্থায় এই বনভ্রমন করতে হলে উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল এবং সকাল কিংবা সন্ধ্যাবেলা। এ সময় পাখী ও বানরের উপস্থিতি বুঝা যায়। বর্ষার পানি নেমে যাবার পর কিছুদিন কর্দমাক্ত থাকে এরপর আবার শীতকালে রাতারগুল বন পায়ে হেঁটে ঘুরা যায়।

পর্যটকরা সকাল বেলা রাতারগুল ভ্রমন শেষে একইদিনে লালাখাল/ জাফলং/পাংথুমাই ঘুরে আসতে পারেন।

Loading