ইসলামী ঐতিহ্য বিনির্মাণ ও সংরক্ষণে তুর্কি মুসলিমদের সুনাম বিশ্বজুড়ে। এ ক্ষেত্রে তুর্কি নারীদের অবদানও স্মরণ রাখার মতো। আধুনিক যুগে এসেও তারা ইসলামের সেবায় পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাদের নানারকম ধর্মীয় সেবামূলক কাজের খবর পাওয়া যায়। তেমনই একটি খবর- রুটি বিক্রি করে জমানো টাকা দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করেছেন তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বুরসার কয়েকজন নারী। প্রদেশটির ওরহানলি এলাকার বাশকো গ্রামে নান্দনিক এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। নারীরা সবাই বাশকো গ্রামের বাসিন্দা এবং তারা রুটি বানিয়ে বিক্রি করেন। মসজিদের নতুন এই স্থাপনার জায়গায় আগে পুরনো একটি মসজিদ ছিল। কিন্তু পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসী নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সবার উদ্যোগে একাত্মতা জানিয়ে গ্রামের রুটি বিক্রেতা নারীরাও নির্মাণ খরচে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং দেড় মিলিয়ন তুর্কি লিরা বা ১৮১ হাজার মার্কিন ডলার খরচে নির্মিত মসজিদের বেশির ভাগ অর্থ তারাই দেয়। সপ্তাহের এক কিংবা দুই দিনের লভ্যাংশ তারা আলাদা ফান্ডে জমা করত। এভাবে দুই বছরের জমানো অর্থ তারা মসজিদে দান করে। রুটি বিক্রেতা নারীদের কাছে অন্য নারীরাও আটা দিয়ে মহৎ এই কাজে অংশ নেয়। বুরসা উত্তর-পশ্চিম আনাতোলিয়ার মারমারা সাগর উপকূলে অবস্থিত তুরস্কের ঐতিহাসিক প্রদেশ। প্রাদেশিক রাজধানীর নামও বুরসা। প্রদেশটির আয়তন ১১ হাজার ৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং ২০১৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানের জনসংখ্যা ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৪৭ জন। বুরসা শহরটি ১৩২৬ থেকে ১৩৬৫ সাল পর্যন্ত ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। পরে ওসমানিয়ারা এডির্ন জয়ের পর তা নতুন রাজধানী হয়ে ওঠে। এডির্ন ১৩৬৫ থেকে ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। এরপর ইস্তাম্বুল নতুন রাজধানী হয়। বুরসার বেশির ভাগ বাসিন্দাই সুন্নি মুসলিম।