চীনের ডুবন্ত শেয়ারবাজারকে উদ্ধার করতে দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অর্থনীতিতে গতি না ফিরলে এই প্যাকেজ তেমন একটা কাজে আসবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চায়না সিকিউরিটিস রেগুলেটরি কমিশন (সিএসআরসি) শেয়ারবাজার চাঙা করতে গত শুক্রবার বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে, যেমন শেয়ার কেনাবেচার খরচ কমানো, শেয়ার বাইব্যাকে সহায়তা করা ও বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে উৎসাহিত করা।
চীনের শেয়ার সূচক যখন নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন, তখন এসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলো।
তবে সিএসআরসি জানে না, স্ট্যাম্প শুল্কের মূল্য কমানো হবে কি না, কারণ বিষয়টি তাদের হাতে নেই। এ ক্ষমতা দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে।
এ ছাড়া সিএসআরসি আরও যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মধ্যে আছে ইকুইটি তহবিলের উন্নয়ন ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে লেনদেনের সময় বৃদ্ধি করা যায় কি না, সে পরিকল্পনাও যাচাই-বাছাই করছে সিএসআরসি।
জুলাই মাসের শেষ দিকে চীনের নেতারা শেয়ারবাজার চাঙা করার ঘোষণা দেন। মূলত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং আবাসন কোম্পানিগুলোর দুরবস্থার কারণে দেশটির শেয়ারবাজারের এই দুর্গতি। চীনের জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ আসে আবাসন খাত থেকে।
সিএসআরসি গত শুক্রবার বলেছে, শেয়ারবাজার চাঙা করাই এখন তাদের অগ্রাধিকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল না হলে বাজার চাঙা হবে না; বাজার নিয়ে মানুষের আশাবাদও তৈরি হবে না।’
অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীদের একাংশ আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই পরিকল্পনায় কিছুটা হতাশ। ওয়ানজি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের তহবিল ব্যবস্থাপক নিউ চুনবাও বলেন, চীনের অর্থনীতির সমস্যা গুরুতর, ফলে এ ধরনের নীতি দিয়ে তা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
চুনবাও আরও বলেন, বাজার সম্পর্কে মানুষের আশাবাদ বৃদ্ধি করতে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার জরুরি। অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় বাজারে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়েছে।
সিএসআরসি বলেছে, ইনডেক্স ফান্ডের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া দ্রুততর করার মাধ্যমে ইকুইটি তহবিলে বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা হবে। এসব তহবিল যেন ডেরিভেটিভের সুবিধা পায়, তা নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া তহবিল ব্যবস্থাপকদের প্রচলিত পথের বাইরে গিয়েও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হবে; অর্থাৎ শেয়ারের দাম কমলেই যে তা বিক্রি করে দিতে হবে, সেই ধারা থেকে বিনিয়োগকারীদের বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
এ ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে শেয়ার বাই ব্যাকে উৎসাহিত করা হবে। যেসব কোম্পানির শেয়ার নিট সম্পদ মূল্য ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের চেয়ে কম দামে লেনদেন হবে, সেসব কোম্পানির অর্থায়ন প্রক্রিয়া তদারক করবে সিএসআরসি।