যশোরে আদালত চত্বরে একটি মামলার বাদীর আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ঝামেলার জেরে অন্যান্য আইনজীবী ও বাদীর ছেলে ব্যারিস্টার এ কে এম গোলাম মোর্তজার লোকজনের হাতাহাতি ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মামলা প্রত্যাহার–সংক্রান্ত বিষয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে সোমবার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কাজী ফরিদুল ইসলাম যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যশোরের চৌগাছা উপজেলার লতিফা হায়দার নামের এক নারী তাঁর স্বামীর ভাই ও ভাতিজাদের বিরুদ্ধে জমিজমা–সংক্রান্ত একটি মামলা করেন আদালতে। কাজী ফরিদুল ইসলাম ওই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী। মামলার বাদীর অনুপস্থিতিতে তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার গোলাম মোর্তজা আইনজীবীকে কাজী ফরিদুল ইসলামকে মামলার আপসনামায় (প্রত্যাহারপত্র) স্বাক্ষর করতে বলেন। কিন্তু কাজী ফরিদুল ইসলাম স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যারিস্টার মোর্তজা ও তাঁর সহযোগীরা কাজী ফরিদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন।
খবর পেয়ে অন্য আইনজীবীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যারিস্টার গোলাম মোর্তজা ও তাঁর সহযোগীদের ধাওয়া দেন। এ সময় ভয় পেয়ে ছুটে গিয়ে নিজের গাড়ির ভেতরে আশ্রয় নেন গোলাম মোর্তজা। তখন আইনজীবীরা তাঁকে ধরে এনে আদালতে বসিয়ে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাদীর অনুপস্থিতিতে তাঁর ছেলে গোলাম মোর্তজা মামলার আপসনামায় স্বাক্ষর করতে বলেন। লেখা না পড়ে আমি স্বাক্ষর করতে রাজি হইনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন ভিডিও করতে শুরু করেন। বাধা দিলে তাঁরা গালাগাল করতে থাকেন। খবর পেয়ে আইনজীবী সমিতির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার এ কে এম মোর্তজা বলেন, ‘আমার মায়ের একটি মামলার আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম। মাকে নিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। মামলা প্রত্যাহারের কাগজে বাদী ও আইনজীবীর স্বাক্ষর দরকার হয়। এতে স্বাক্ষর করতে বলা হলে তিনি করেননি। উল্টো হুমকি দেন। একপর্যায়ে মুঠোফোনে কল করে লোকজন ডেকে এনে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ সময় আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।’
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জুয়েল ইমরান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি।