নদ-নদী, হাওর, জাতীয় উদ্যান, বনভূমি, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর দেশের অন্যতম সুন্দর একটি অঞ্চল ছিল হবিগঞ্জ জেলা ৷ কিন্তু গত প্রায় দুই দশক ধরে কিছু অপরিণামদশী কর্মকান্ডের জন্য পরিবেশগত সংকট চরম আকার ধারণ করছে। শিল্পায়নের নামে কলকারখানাগুলো মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটিয়ে আসছে। যত্রতত্র কৃষিজমি, খাল, ছড়া এবং নদীসহ সকল প্রকার জীবন ও জীবিকা কলকারখানার দূষণের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে নদী, পুকুর, জলাশয়গুলো বছরের পর বছর ধরে দখল, দূষণ, পলি ও আবর্জনা পতিত হয়ে অনেকাংশে বুজে এসেছে। এছাড়াও বেশ কয়েক বছর ধরে হবিগঞ্জ শহর ও আশেপাশে জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারন করেছে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে দেখা দেয় কৃত্রিম বন্যা। শহরের উচূ নীচু এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে অহরহ। রাস্তাঘাট ঘরবাড়ীতে ঢুকছে বৃষ্টির পানি । বৃষ্টির পানির প্রধান আধার পুরাতন খোয়াই নদী, পুকুর জলাশয় খাল দখল-ভরাট হবার কারনে হবিগঞ্জ জলাবদ্ধতার শহরে ‘লাভ করেছে। ‘হবিগঞ্জের পরিবেশ ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনায় বক্তারা একথা বলেন।
গত ১ জ্বলাই শনিবার শহরের আমিরচান কমপ্লেক্সের কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশ বিষয়ক এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাপা হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ এর রে দেশের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: কামরুল হাসান তরফদার। মূল আলোচক ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক ও বাপা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।
আলোচনায় অংশ নেন ও বিশিষ্ট লেখক, গবেষক শেখ ফজলে এলাহি, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহান আরা সুপ্রিম কোর্টের অইনজীবী ব্যারিস্টার মো: সাখাওয়াত হোসেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি ও পাবলিক হেলথ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ, বাপা হবিগঞ্জের সহ-সভাপতি আ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, তাহমিনা বেগম গিনি, সাবেক জন্প্রতিনিধি মোঃ হাবিবুর রহমান, আ্যাডভোকেট বিজন বিহারি দাস, ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ নোমান মিয়া, চলচ্চিত্র পরিচালক মুক্তাদির ইবনে সালাম, মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, আ্যাডভোকেট শায়লা খান, এম এ ওয়াহেদ, মো: বাহার উদ্দিন, তৌহিদুর রহমান রানা, ওসমান গনি রুমি, মোঃ আবিদুর রহমান, মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
শুরুতে ধারণা বক্তব্য রাখেন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল । শরীফ জামিল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে হবিগঞ্জ পৌরসভার একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছি। এ সকল প্লান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে প্রাকৃতিক বাস্ধুতত্ত্রকে গুরুত্ব দেয়া চলমান বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে একটি গৃহীত বিষয়। ভ্রান্ত উন্নয়ন ধারণার বেড়াজাল থেকে না বেরিয়ে আসলে সমস্যাসমূহ আরো জটিলতর হবে।
তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জের জলাবদ্ধতা ও পানিসংকট নিরসনে শুধুমাত্র পুকুর সংরক্ষণই না, অবিলম্বে পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধার জরুরী ৷ প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক কামরুল হাসান হবিগঞ্জের পরিবেশ সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান । তিনি শহরের যানজট ও শব্দদূষণ সমস্যার কথা উল্লেখ করে পরিবেশের সংকট সমূহ সমাধানে সরকারি উচ্চ পর্যায়েও আলোচনা উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করেন এবং এক্ষেত্রে হবিগঞ্জের পরিবেশ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে ঢাকাস্থ হবিগঞ্জ সমিতির পক্ষ থেকে সত্তরিয় ভমিকা পালন করবেন বলে জানান ৷