টেস্টে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়

টেস্ট ক্রিকেটে অনন্য রেকর্ড কায়েম করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

আফগানিস্থানের বিপক্ষে মিরপুরে আয়োজিত একমাত্র টেস্ট ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানে হারিয়ে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগারবাহিনী। আর সেইসঙ্গে তারা একবিংশ শতাব্দীতে টেস্ট ক্রিকেটে সবথেকে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। এই ম্যাচের দুই ইনিংসেই শতরান করেন বাংলাদেশের ব্যাট্সম্যান নাজমূল হোসেন শান্ত। এছাড়া আরও একটি সেঞ্চুরি আসে মোমিনূল হকের ব্যাট থেকে। বল হাতেও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স করেছেন। তাসকিন আহমেদ একাই শিকার করেছেন ৪ উইকেট। আর সেই সুবাদে আফগান ক্রিকেটাররা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১৫ রানে অলআউট হয়ে যায়।

ম্যাচে টসে জিতে আফগানিস্তান বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাট করার আহ্বান জানায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটটা দ্রুত পড়ে যায়। সেই সময় মাত্র ৬ রান ছিল বাংলাদেশের। এরপর দ্বিতীয় মাহমুদউল হাসান জয় এবং নাজমূল হাসান শান্তর মধ্যে ২১২ রানের একটা পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। অবশেষে জয়ের উইকেটটা শিকার করে রহমত শাহ এই পার্টনারশিপ ভেঙে দেন। এই ইনিংসে ১৭৫ বলে ১৪৬ রান করেছিলেন শান্ত। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে বাংলাদেশের উইকেট পড়তে শুরু করে। অবশেষে ৩৮২ রানে বাংলাদশের গোটা দলই অলআউট হয়ে যায়। এই ইনিংসে একাই ৫ উইকেট শিকার করে প্রচারের আলোয় চলে আসেন নিজাত মাসুদ। এছাড়া জোড়া উইকেট শিকার করেছেন ইয়ামিন আহমেদজাই। জাহির খান এবং আমির হামজারাও নিজেদের সাধ্যমতো উইকেট শিকার করেন।

৩৮২ রান তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তানের শুরুটাও বেশ খারাপ হয়। শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই ব্যাকফুটে তারা চলে যায়। এরপর নাসির জামাল এবং আফসার জাজাই দলকে বাঁচানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পঞ্চম উইকেটে গড়ে ওঠে ৬৫ রানের পার্টনারশিপ। তবে মেহদি হাসান মিরাজের বলে জামাল ৩৫ রানে ফিরতেই, ছন্দপতন ঘটে। এরপর মাত্র ১৪৬ রানেই গোটা আফগানিস্তান দল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। এবাদত হোসেন এটাই ৪ উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া মহম্মদ শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম এবং মিরাজ দুটো করে উইকেট শিকার করেছেন।

ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৬৬২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে, আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের শুরুটা একেবারে জঘন্য হয়। প্রথম বলেই ইব্রাহিম জারদানের উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। পাশাপাশি একটা রিভিউ তারা হারিয়ে ফেলে। এরপর প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরেন আবদুল মালিকও। তাঁর উইকেটটি নেন তাসকিন আহমেদ। অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদি ১৪ বলে ১৩ রান করেন। কিন্তু, তাসকিনের একটি ডেলিভারি তাঁর মাথায় লাগার কারণে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তৃতীয় দিনের শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ৪৫ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে ফেলে।

রহমত শাহ এবং নাসির জামাল চতুর্থ দিনের ইনিংস শুরু করেন। কিন্তু, শনিবারও ব্যাট হাতে আফগানিস্তান ব্রিগেডে রীতিমতো থরহরিকম্প দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের হয়ে দিনের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন এবাদত হোসেন। তিনি জামালকে ফ্রন্টফুটে এনে ফাঁদে ফেলেন। এরপর আবারও আফগান ব্রিগেড ধসতে শুরু করে। ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন করিম জানাত। তিনি দ্রুত কয়েকটি রান তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু, ১৮ রানে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দূর্ভাগ্যজনকভাবে একটি বল জাহির খানের কনুইয়ে এসে লাগে। প্রচন্ড যন্ত্রণার কারণে তিনিও রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। অবশেষে ৫৪৬ রানে বাংলাদেশ জয়লাভ করে।

Loading